

নানা জটিলতা, নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত ও দীর্ঘ অপেক্ষার পর আজ থেকে শুরু হচ্ছে পর্যটকবাহী জাহাজের সেন্টমার্টিন যাত্রা। প্রথমদিনে তিনটি জাহাজ দ্বীপের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। একই সঙ্গে আরও চারটি জাহাজ প্রস্তুত রয়েছে, প্রশাসনের অনুমতি পেলেই সেগুলোও চলাচল শুরু করবে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি-এ দুই মাস কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে নিয়মিতভাবে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করবে।
সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, ‘১ ডিসেম্বর সকাল ৭টায় কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, এমবি বারোআউলিয়া ও কেয়ারি সিন্দাবাদ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। টিকিটধারী পর্যটকদের ভ্রমণ অনুমতিও আমরা সংগ্রহ করে দিচ্ছি।’
তিনি জানান, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুই হাজারের বেশি টিকিট বিক্রি করা হবে না।
ঘাটে প্রস্তুত থাকা অন্য চারটি জাহাজ হলো-এমভি বে ক্রুজ, এমভি কাজল, কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন ও আটলান্টিক ক্রুজ।
চারটি জাহাজকে অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন : কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিদুল আলম জানান, ‘এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, এমভি বারো আউলিয়া, কেয়ারি সিন্দাবাদ ও কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন- এ চারটি জাহাজকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২ নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। নিরাপত্তার কারণে এবার টেকনাফ নয়, সরাসরি কক্সবাজার শহরের ঘাট থেকে জাহাজ ছাড়বে।’
কড়া নজরদারি ও সীমিত পর্যটক প্রবেশ : পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, ‘দুই হাজারের বেশি পর্যটক সেন্টমার্টিনে যেতে দেওয়া হবে না। নুনিয়ারছড়া ও দ্বীপের জেটিঘাটে আলাদা তল্লাশি থাকবে। ২২ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী-১ ফেব্রুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত দ্বীপে ভ্রমণ বন্ধ থাকবে। নভেম্বরে শুধু দিনের বেলায় ভ্রমণ অনুমোদিত। ডিসেম্বর-জানুয়ারি ২ মাস রাতযাপন করা যাবে। প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২০০০ পর্যটক প্রবেশ করতে পারবেন।
নির্দেশনাগুলোতে আরও রয়েছে-রাতের বেলা সৈকতে আলো বা বারবিকিউ পার্টি নিষিদ্ধ, কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রি নিষিদ্ধ, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, শামুক-ঝিনুক, প্রবালসহ যে কোনো জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা দণ্ডনীয় অপরাধ, মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ যে কোনো মোটরযান চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, পলিথিন ও একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক ব্যবহার নিরুৎসাহিত, পর্যটকদের ট্রাভেল পাশ ও কিউআর কোডযুক্ত অনলাইন টিকিট বাধ্যতামূলক।
তথ্য অনুযায়ী, এই জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপে ভ্রমণ চলবে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সেন্টমার্টিন আবারও ৯ মাসের জন্য পর্যটকবিহীন থাকবে।



